মায়াবী চোখ - Mayabi Chokh । Bangla Love Story

মায়াবী চোখ - Mayabi Chokh । Bangla Love Story - Sad Story Bangla romantic love story bangla bangla golpo love sad love story bangla protilipi bangla premer golpo sad golpo bangla romantic story sad love story in bengali bangla golpo romantic heart touching love story in bengali bangladeshi love story islamic love story bangla bangla love story 2023 sad love story bengali romantic golpo story short love story bangla bangla golpo love story bangla love story film bangla love story golpo emotional story bangla bangla film love story love story bangla film love story bangla golpo

মায়াবী চোখ - Mayabi Chokh । Bangla Love Story



মায়াবী চোখ - Mayabi Chokh


আজকাল দীপা ভাবী কেমন করে যেন আমার দিকে তাকায়। তাছাড়া সে সবসময় চোখে কাজল দিয়ে রাখে। তাকালে মনে হয়, তাঁর চোখে কীসের যেন আকুতি আকাঙ্ক্ষা ও মায়া। মেয়েদের চোখের ভাষা আমি তেমন বুঝি না। তবে দীপা ভাবী যখন আমার দিকে তাকায়, রহস্যময় এক গোলকধাঁধায় পড়ে যাই আমি।

বড় ভাইয়া চাকরি করে, তার দেখা আমি পাই না। খুব ভোরে অফিসে যায়, হয়তো অনেক রাত করে বাসায় ফিরে। তাঁরা স্বামী-স্ত্রী একসাথে কখনো ঘুরতে বের হয়েছেন কীনা আমার চোখে পড়েনি। বলতে গেলে দীপা ভাবীর সারাটা দিন প্রায় একা-একা কাটে। টিভি দেখে, মা’র সাথে গল্পগুজব করে। কিন্তু ইদানীং ধরে লক্ষ্য করছি দীপা ভাবি এটা-ওটার বাহানা ধরে আমার রুমে এসে ঘুরঘুর করে। আমার ঘুম থেকে উঠতে খুব দেরী হয়।সকাল নয়টা-দশটা বেজে যায়। আজ সকাল-সকাল ঘুম থেকে উঠে দেখি দীপা ভাবী কিচেনে রুটি বেলছে। আমি দাঁতব্রাশ করতে-করতে ওয়াশ রুমে যাচ্ছি। তখনি দীপা ভাবী কিচেন থেকে বের হয়ে আমার সামনে এসে দাঁড়াল। মুছকি একটা হাসি দিয়ে বললো, ”কী ব্যাপার আজ খুব তাড়াতাড়ি উঠলে যে?”

-এই তো, ঘুম ভেঙে গেছে।

-হুম, ভালো। নাস্তায় রুটির সাথে কি খাবে সবজি না ডিম?

-আপনার এত কষ্ট করতে হবে না। আমার ডিম ভাজি হলেই চলবে।

দীপা ভাবি কিছুটা আশ্চর্য হয়ে, ”ওমা একী আমায় আবার আপনি করে ডাকছ কেন?” তার কথা শুনে হচকিয়ে গেলাম, বললাম, ”কী বলেন এসব?আপনি আমার বড় ভাবী, আপনাকে তো আপনি করেই ডাকবো!” হঠাৎ লক্ষ্য করি দীপা ভাবীর মুখটা নিমিষেই কেমন যেন হয়ে গেল। ভাবছি দীপা ভাবীর মাথা খারাপ হয়ে গেল নাকি। কীসব যা-তা বলছে? দীপা ভাবী মুখে কি যেন বিড়বিড় করলো। কিছুক্ষণ পর মুখের ভাব স্বাভাবিক করে বললো, ”তোমাকে না গতকাল রাতে বলেছি আমায় দীপা বলে ডাকবে,” এই বলে খপ করে আমার হাতটা ধরে ফেললো। ”দেখ তুমি আর যা কিছু করনা কেন প্লিজ আমায় ভাবী বলে ডেকো না।”

Bangla Love Story - Sad Story Bangla

বিদ্যুৎতের গতির মত এক ঝটকায় হাতটা ছাড়িয়ে সড়ে আসলাম। দেখি সে অসহায়ের মত আমার দিকে তাকিয়ে আছে। তাঁর চোখ দুটো ছলছল করছে; এমন কাজল লেপ্টানো মায়াময় চোখের খুব বেশিক্ষণ তাকানো যায়না। আমি জবাব না দিয়ে মাথা নিচু করে ওয়াশ রুমে ঢুকে গেলাম। মা তার রুমে ভাবীর সাথে গল্পগুজব করছে। আমি ড্রয়িংরুমে হিন্দি মুভি দেখছি। এই গজনি মুভিটা কেন জানি আমার খুব প্রিয়। হঠাৎ তাকিয়ে দেখি দীপা ভাবী আসছে । জানি এখনি এসে আমার গা ঘেঁষে বসবে। মা বেশিভাগ সময় তার রুমেই থাকেন। বাইরে কী হচ্ছে না হচ্ছে সে সর্ম্পকে তিনি খুব একটা খোঁজ-খবর রাখেন না। আমি তড়িঘড়ি করে ওঠে দাঁড়াতেই দীপা ভাবি মুচকি একটা হাসি দিয়ে বললো, ”কী হলো ওঠে পড়লে যে?”

-ঘুমুতে যাব । কয়দিন ধরে শরীরটা খুব খারাপ।আর ডাক্তার ও নিষেধ করেই দিয়েছে রাত যেন না জাগি।
-ঠিক আছে ঘুমতে যাও।

মা তার রুম থেকে গলা বাড়িয়ে বললেন, ”বউমা ওকে জিজ্ঞেস করতো রাতের ওষুধ খেয়েছে কিনা?” দীপা ভাবী আমার দিকে তাকিয়ে নরম গলায় বললো, ”এই তো মনে হয় ভুলে গেছো ওষুধ খেতে। চলো তোমার রুমে গিয়ে ঠিকঠাক মত ওষুধ খাইয়ে দিয়ে আসি।” কথা শুনে আমি আঁতকে ওঠলাম। দীপা ভাবি সবসময় ফন্দি খুজে আমার রুমে যাওয়ার। গতকাল রাতে সে আমার রুমে এসে অদ্ভুত এক কান্ড ঘটিয়ে ফেলেছিলো তা এই মাত্র মনে হলো। ওষুধ খেয়েছি কিনা তা জানতে এসে বেশ কিছুক্ষণ এটাওটা নিয়ে কথা বলার মাঝখানে হুট করে আমার গাল টেনে দিলো। আমি বোকার মত তাকিয়ে ছিলাম কিছুক্ষণ, এরপর কিছুই হয়নি এমন একটা ভাব করে রুম থেকে বের হয়ে গেলো। ফ্যাকাসে কণ্ঠে বললাম, ”না-না আপনার আসতে হবে না। আমি তো এখন নিজে-নিজেই ওষুধ খেতে পারি।”
-আমাকে দেখলেই তুমি এমন ভয় পেয়ে যাও কেন? তোমার রুমেও যেতে পারি না এখন,গেলেই অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে রাখো। আমাকে কিছুক্ষণ একা বকবক করে চলে আসতে হয়,” দীপা ভাবি আস্তে করে আমার হাত ধরলো। ”চলো তোমায় ওষুধ খাইয়ে দিয়ে আসি। আজ আর কোন বাড়তি কথা বলবো না। তোমার ওষুধ খাওয়া শেষ হলেই চলে আসবো। ” আমি হাজারো মুগ্ধতা নিয়ে দীপা ভাবীর চোখের দিকে তাকিয়ে আছি। তাঁর চোখে কী যেন এক মায়া, কী এক প্রবিত্রতা ওষুধ খাওয়া শেষ হলে, মশাড়ি টাঙিয়ে, কাঁথাটা শরীরে ভালভাবে জড়িয়ে দিলো। লাইট নিভানোর আগে মিষ্টি করে হেসে বললো, ”গুডনাইট। যদি পারো কাল সকালেও দ্রুত উঠে যেও।” দীপা ভাবী দরজা বন্ধ করে চলে গিয়েছে বেশ কিছুক্ষণ আগেই।কিন্তু আমি জানি সে রাতে চুপিচুপি আবার আসবে। কপালে হাত দিয়ে দেখবে জ্বর এসেছে কীনা? কাঁথাটা পায়ের কাছে চলে গেলে সেটা বুক পর্যন্ত উঠিয়ে দিয়ে তারপর চুপিচুপি আবার চলে যাবে।

তাঁর এই অদ্ভুত আচরণ আমাকে ভাবায়। কীসের জন্য সে এসব করে; আর কেনইবা তাঁর চোখে চোখ পড়লে, তাঁর চোখের তাঁরায় হারিয়ে যাই আমি। কী রহস্য লুকিয়ে আছে ওই চোখের অন্তরালে? মাঝরাতে শরীরে স্পর্শ পেতেই হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেল। একটা ছায়ামূর্তি আমার বালিশের পাশে বসে আছে। বুঝতে আর বাকি নেই কে এসেছে। “কী হলো ঘুম ভাঙিয়ে ফেললাম বুঝি?” এই বলে দীপা ভাবী বিছানা থেকে ওঠে লাইট জ্বালালো। কিছু একটা বলতে গিয়েও বলতে পারলাম না,কিংকর্তব্যবিমূঢ়েরর মত তাকিয়ে রইলাম তাঁর দিকে। সে বিছানায় এসে বসতে-বসতে কৈফিয়তের স্বরে বললো, “কাঁথাটা ফেলে দিয়েছিলে তুমি, ঠান্ডা লাগতে পারে এই ভেবে শরীরে জড়িয়ে দিতেই দেখি তুমি চমকে সজাগ হয়ে গেলে।”
আমি আস্তে করে চাপা স্বরে বললাম, “ভাবী এত রাতে কীজন্য আপনি আমার রুমে আসলেন?” দীপা ভাবী আহত চোখে আমার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আমি চোখ বন্ধ করে মুখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে নিলাম; তাঁর এই কাজল ভেজা চোখের মায়ার বাঁধনে আমি আর আটকা পড়তে চাইনা। আচমকা সে আমার হাত ধরলো। আমার দিকে কিছুটা ঝুঁকে পড়ে কাঁদো গলায় বললো, “নিজের বিবাহিত বউকে ভাবী বলে কেন এত কষ্ট দাও?” কী হলো জানি না, হঠাৎ করে ফাঁকা হয়ে গেল আমার মাথাটা,তীক্ষ্ণ একটা যন্ত্রণা হচ্ছে। চোখের সামনে ভেসে উঠছে, রেল স্টেশন, ট্রেনের ভিতর হিজাব পড়া একটা মেয়ে, তাঁর অপরুপ হরিনী দীপ্তিময় চোখ দুটো দিয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে সেই চোখ দুটোই কী এই দীপার?

আমি তাকিয়ে আছি দীপার দিকে। চোখের জল মুছে সে বললো, ” ছয় মাস আগে অফিস থেকে ফেরার পথে তুমি মারাত্মক এক্সিডেন্ট করলে। যখন জ্ঞান ফেরে কাউকেই তুমি চিনতে পারলে না। ডাক্তার বলেছে অনেক সময় লাগবে; ধৈয্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে। মাস তিনেক এভাবেই কেটে যায়। মাকে তুমি মা বলেই ডাকো, কিন্তু আমাকে তোমার বউ পরিচয় করিয়ে দিলেও সেটা তোমার মনে থাকে। কিছুদিন ধরে কী এক অদ্ভুত কারণে, তোমার কল্পনার জগৎ থেকে তুমি আমায় ভাবী ডাকতে শুরু করলে। বিছানাও আলাদা করে দিলে। তখন বাধা দেইনি,কারণ ডাক্তার বলে দিয়েছিল তোমার উপর প্রেশার না দিতে।

Sad Story Bangla romantic love story bangla bangla golpo love sad love story bangla protilipi bangla premer golpo sad golpo bangla romantic story sad love story in bengali bangla golpo romantic heart touching love story in bengali bangladeshi love 

প্রতিরাতে তোমার সাথে আমি গল্প করি। আর প্রতিদিন নতুন করে তোমাকে আমার পরিচয় দিতে হয়। খানিকটা সময় তুমি আমায় চিনতে পারো,কিন্তু সকাল হলেই আবার সবকিছু ভুলে যাও।” মাথার ভেতর যন্ত্রণা আস্তে-আস্তে বাড়তে লাগলো। দীপার মুখটাও স্পষ্ট হয়ে উঠছে এখন, আমি ওকে চিনতে পারছি। কতক্ষণ চিনতে পারব জানিনা। তাঁকে আমি প্রথম দেখি রেল স্টেশনে।দেখা বলতে শুধু মায়াবী চোখ দুটোই দেখি।কী অদ্ভুত সুন্দর ছিলো চোখ দুটো । চুপিচুপি তার পিছু নিয়ে বাসার ঠিকানা জেনে আসি। তারপর দিন’ই ওর বাসায় বিয়ের প্রস্তাব পাঠাই। সেই কাজল চোখের সুনয়না মেয়েটাই এই দীপা, এখন আমার বউ।

অসুস্থ হয়ে যাওয়ার পরেও যার চোখের চাহনির প্রেমে পড়ছি আমি প্রতিদিন। দীপা শাড়ির আঁচল দিয়ে আমার চোখের জল মুছে দিল। মৃদু হেসে বললো, ”কী চিনতে পারলে তো?” আমি দীপাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম। জড়ানো গলায় বললাম, ”যদি কখনো আর না চিন্তে পারি ছেড়ে যাবে নাতো আমায়?” দীপা আমার দিকে ছলছল চোখে তাকিয়ে আছে। তাঁর এ চোখের ভাষা আমি বুঝতে পারছি; জানি মায়াবী চোখ কখনো মিথ্যা বলেনা।


মায়াবী চোখ - Mayabi Chokh । Bangla Love Story - Sad Story Bangla romantic love story bangla bangla golpo love sad love story bangla protilipi bangla premer golpo sad golpo bangla romantic story sad love story in bengali bangla golpo romantic heart touching love story in bengali bangladeshi love story islamic love story bangla bangla love story 2023 sad love story bengali romantic golpo story short love story bangla bangla golpo love story bangla love story film bangla love story golpo emotional story bangla bangla film love story love story bangla film love story bangla golpo


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url