ভালবাসা - Valobasha । Romantic Bangla Love Story
ভালবাসা - Valobasha । Romantic Bangla Love Story ভালবাসার গল্প স্বামী স্ত্রীর ভালবাসা রিয়েল লাভ স্টোরি cute love story in bangla romantic love story bangla 2021 রোমান্টিক লাভ স্টোরি গল্প বড়দের রোমান্টিক গল্প short love story bangla romantic love story bangla pdf কষ্টের লাভ স্টোরি রোমান্টিক লাভ স্টোরি লিংক লাভ স্টোরি বাংলা রিয়েল লাভ স্টোরি নতুন রোমান্টিক লাভ স্টোরি সুন্দর লাভ স্টোরি রোমান্টিক লাভ স্টোরি পিকচার রোমান্টিক লাভ স্ট্যাটাস
ভালবাসা - Valobasha
দুপুরের তীব্র রোদে সদ্য পরিচয় হওয়া আনিশার সাথে গল্প করতে করতে হেটে বাসাই ফিরছে রিয়া
হঠাৎ কি যেন মনে করে পিছন ফিরে তাকালো রিয়া,,,কারণ তার পাশ কাটিয়েই হেটে যাচ্ছে নিরব নামের ছেলেটা সেইদিকে তাকিয়েই ঠোটের কোনে মুচকি একটা হাসি দিল রিয়া ক সেই ধ্যানের মধ্যেই কেও একজন ধাক্কা দিলো রিয়াকে... এই রিয়া কি হয়েছে তোমার? ছেলেটা কে?(আনিশা)
কথাটা শুনেই রিয়ার ধ্যান ফিরলো কথা এড়ানোর জন্য বলল আচ্ছা আমরা তোহ সেম ইয়ার তাহলে তুই করে বলি?আনিশাও বেশ বুঝতে পারলো রিয়া কথা এড়াতে চাইছে তাই সে উত্তর দিলো অবশ্যই.. এভাবে হাটতে হাটতে একসময় তারা বাসাই এসে পৌছে....
রিয়ার পাশের ফ্ল্যাটেই আনিশার ফ্ল্যাট,,বাসাই এসে গোসল করে বেলকনিতে গিয়ে দাড়ালো,,অনেকদিনের জমানো কষ্ট আজ যেন আর বাধ মানতে চাইছে নাহ চোখের অশ্রু বেয়ে গাল অতিক্রম করে ফেলল ঝর ঝর করে কেদে দিল রিয়া প্রকৃতিও যেন আজ রিয়ার সাথে তাল মিলালো বিকাল গড়িয়ে রাত হতে চললো এখনো বৃষ্টি থামেনি এর মধ্যে কয়েকবার ডাকতে এসেছিলো রিয়ার মা খাবার খাওয়ার জন্য প্রতিবার নানা অজুহাত দিয়ে মাকে না করেছে.. রাত ১২টা ছুই ছুই এখনো বেলকনিতে বসে নানা ভাবনায় ডুবে আছে সে। এসব ভাবনার মধ্যেই রিয়ার ফোন বেজে উঠলো বেশ অবাক হয়ে স্ক্রিনের দিকে তাকাল রিয়া আননোন নাম্বার থেকে কল এসেছে হয়তো কেও ভুল করে দিয়েছে কল এই ভেবে আর কল ধরলো নাহ রিয়া মিনিট দুইয়েক পর আবারও ফোন বেজে উঠলো সেই আগের নাম্বার থেকেই,, এবার যেন বেশ বিরক্তি নিয়ে ফোন ধরলো রিয়া...
ফোন ধরার পর অপাশ থেকে এক নারীর কন্ঠ ভেসে আসলো কন্ঠ শুনার সাথেই সাথেই রিয়ার বুঝতে বাকি রইলো নাহ এইটা আনিশা কিন্তু এত রাতে কেন ফোন করলো সে?
হেলো রিয়া!
-হে আনিশা বল
-এত রাত হয়েছে এখনো ঘুমাও নাই?উফফ সরি তুমি বলে ফেললাম!
-সমস্যা নেই!আসলে আমার ঘুম আসছিল নাহ তাই আরকি!
এভাবেই টুকটাক কথা হলো আনিশার সাথে সময়টা বেশ ভালোই উপভোগ করছিল দুইজন অবশেষে রিয়া বিদায় নিয়ে ফোন কেটে দিলো
এতক্ষণ ঘুম না আসলেও এখন যেন রাজ্যের ঘুম চোখে এসে জড়ো হয়েছে..
সকালে কলেজ আছে এইভেবে বিছানায় গিয়ে গা এলিয়ে দিল রিয়া সাথেই সাথেই ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে গেলো সে..
ভুলেই গেছিলাম এবার আমার পরিচয়টা দিয়ে নেই আমি রিয়া এবার ইন্টার ফাস্ট ইয়ারে আনিশার সাথে আমার কলেজ লাইফের ফাস্ট ক্লাসেই পরিচয় হই.. আর নিরব ওর সাথে আমার ৫বছরের পরিচয় তবুও আজ অচেনা আমি তার কাছে
🍁🍁🍁
এই রিয়া দরজা খোল কলেজের টাইম চলে যাচ্ছে.. মায়ের ডাকে ঘুম ভাংগলো রিয়ার.. ফ্রেশ হয়ে না খেয়েই বেড়িয়ে পড়ে সে.. নিচে নেমে দেখে আনিশা দাঁড়িয়ে আছে মুচকি হাসি দিয়ে দুজনই রিকশা নিয়ে কলেজে যাওয়ার জন্য রওনা হলো যাওয়ার পথে দুইজনের মাঝে আর কথা হলো নাহ আনিশা ব্যস্ত ফেসবুকিং এ আর রিয়া তার ভাবনায় রিয়ার ভাবনার মাঝে বাইক নিয়ে তার পাশ কাটিয়ে কে যেন গেলো রিয়ার বুঝতে দেরি হলো নাহ ওইটা নিরব.. তাকে এক পলক দেখেই চোখ দিয়ে একফোটা অশ্রু বের হলো বিষয়টা আনিশার নজর এড়ালো নাহ কিছু জিজ্ঞেস করতে গিয়েও কি যেন মনে করে আর করলো নাহ কলেজে পৌছে গেলো ওরা ভাড়া মিটিয়ে ক্লাসে গেলো.. ক্লাস শেষে ক্যাম্পাসে বসে আছে
ক্লাস শেষে ক্যাম্পাসে বসে আছে রিয়া আর আনিশা এর মাঝেই কে যেন আনিশার পাশে এসে বসলো রিয়া বেশ বুঝতে পারছে এইটা আনিশার বয়ফ্রেন্ড.. আনিশা তাদের দুইজনকে পরিচয় করিয়ে দিলো এভাবেই কাটতে লাগলো বেশ কয়েকদিন দেখতে দেখতে তিনটা মাস পেরিয়ে গেছে রিয়ার জীবন থেকে এই তিনমাসে অনেককিছুই ঘটে গেছে..আনিশা সেই আগের আনিশা নেই ব্রেকাপ হওয়ার পর থেকে কেমন যেন মন মড়া হয়ে থাকে সবসময় কারণ ছেলেটাকে যে সে ভিষণ ভালোবেসেছিল কিন্তু সে মুল্য দিল নাহ আসলে বেশি ভালোবাসলে মানুষ হারিয়ে যাই কথাটাই তীব্রভাবে বিশ্বাসী আনিশা রিয়ার সাহায্যে সে এখন অনেকটাই আগের মতো হয়েছে রিয়া আর আনিশার মাঝে এখন খুব ভালো বন্ধুত্ব কেও কাউকে ছাড়া বুঝেই নাহ কিছু..
🍁🍁🍁
এর মাঝে রোজই দেখা হচ্ছে রিয়া আর নিরবের কিন্তু নিরব দেখেও না দেখার ভান করে পাশ কাটিয়ে চলে যাই রিয়ার.. আচ্ছা আমি কি এতটাই খারাপ দেখতে?আমি কি ভালোবাষা পাওয়ার যোগ্য নাহ? কথাগুলো আনিশাকে বলছিল রিয়া! আচ্ছা সেইটা পরে বলি তর সাথে আমার এতদিনের বন্ধুত্ব কিন্তু
এসব তোহ আগে বলিসনি ইতিহাসটা কি বলা যাবে মেম?আনিশার মুখে মেম ডাওক্টা আজ নতুন নই তাই মুচকি হেসে রিয়া বললো বেশ তবে চলেন নদীর পাড়ে ওইখানে বসে আপনাকে ইতিহাস শুনাই..
তারপর আসলি তোহ নদীর পাড়ে এখন বল
হুম..
🍁🍁🍁🍁🍁
৫বছর আগে ক্লাস সেভেনে পড়ি তখন আমার একটা ছেলের সাথে পরিচয়.. কোচিং করতাম এক্সাথে সেইখান থেকে ভালো বন্ধুত্ব হই আমাদের.. দেখতে দেখতে একটা বছর পেরিয়ে গেছে যতই দিন যাই আমাদের বন্ধুত্ব আরও গাড় হয় ওর প্রতি ধীরে ধীরে আমার ফিলিংস জন্ম নেই আর সেইটাই ছিলো বড় ভুল আমার যখন ক্লাস ১০ এ পড়ি তখন ফেসবুকে অর সাথে আমার কথা হচ্ছিল.. কথাই কথাই বলে দিলাম দেখা করবি? তার উত্তর, হে করব। সেইদিন ঠিক করি আমি তাকে বলে দিব ভালোবাসি তকে সারাজীবন আমার পাশে থাকবি? বিকেল ৪টাই আমাদের দেখা হলো আমিও অনেক ভেবে কথাটা বলে ফেললাম। অনেক আশা নিয়ে সেইদিন কথাটা বলেছিলাম.. আমার বিশ্বাস ছিলো ও রাজি হবে.. মনের মাঝে যে কেমন আনন্দ হচ্ছিল তখন কিন্তু সে আমাকে নিরাশ করল বলল তোর মতো মেয়ের সাথে আমার যায়? তুই কুই আর আমি কই? তুই যে আমার বন্ধু এইটাই তোর ভাগ্য.. তোর থেকে ভালো ভালো মেয়ে আমার পিছনে লাইন দিয়ে থাকে আর সেইখানে তুই তোহ একটা পিপড়া মাত্র.. কথাগুলো শুনে আর নিজেকে সামলাতে পারিনি আমি আমার জীবনের প্রথম প্রেম এভাবে শেষ হয়ে যাবে?
তারপর শুরু হই আমার নতুন জীবন আমি পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ি নিজেকে অনেকটাই সামলে নিয়েছি কোচিং বদলে ফেলেছি ফেসবুকে ঢোকা হই নাহ আর তিনমাস কেটে গেলে এসএসসি পরীক্ষা দিলাম ১মাস ধরে এর মধ্যে নিরবও একটাবার আমার খোজ নেইনি আমার সাথে কথা বলার চেষ্টা করেনি সে আমার এক ইয়ার সিনিয়র ছিলো তবুও ফ্রেন্ডশিপটা হয়ে গেছিলো আমার মতো ফ্রেন্ড নাকি সে আর একটাও দেখিনি তার ওসব কথা মনে পড়লে মাঝে মাঝে নিজের হাসি পেতো খুব সে ঢাকার নটোর ড্রেম কলেজে এডমিশন নিয়েছিলো..
কিছুদিন পর আমার রেজাল্ট বের হই খুব ভালো রেজাল্ট করাই বাবা-মা খুব করে চাই আমি যেন ইডেন কলেজে পড়ি তাদের আশা পুরন করার জন্যই আমার ঢাকা আসা তারপর তোহ সব জানিসই! কথাগুলো বলে কান্নায় ভেঙে পড়ে রিয়া কিছুক্ষণ কান্নার পর আনিশার কথায় হুশ ফিরে রিয়া
এই রিয়া কি করছিস? আশে পাশের সবাই কেমন করে দেখছে.. চল বাসায় চল বাইরে মেঘ জমেছে এই বুঝি বৃষ্টি নামবে..পরে বাসাই যেতে পারব নাহ যস্তে পারব নাহ. বকা শুনতে হবে.. আর কলে কথা হবে রাতে এই বলে দুইজন বেরিয়ে রিকশা নিয়ে বাসায় যাওয়ার পথে রওনা দেই.. আসলে রিয়ার থেকে একটু দুরেই বসা ছিলো নিরব সেইটা রিয়া লক্ষ্য না করলেও আনিশা লক্ষ্য করেছিলো.. তাই সেইখান থেকে যত দ্রুত সম্ভব চলে এসেছে..
🍁🍁🍁
বাসায় আসার পর সবে মাত্র ফ্রেশ হয়ে বেলকনিতে গিয়ে বসেছে আনিশা এর মাঝেই তার কলটা বেযে ওঠে আননোন নাম্বার থেকে কল এসেছে.. কলটা রিসিভ করে আনিশা
হেলো আনিশা!
-জ্বি কে বলছেন? কি চাই?
আমি নিরব বলছি.. আমার একটা কাজ
করে দিতে হবে তোমার!
-আজব তোহ আপনার কাজ আমি কেন করব? আর আপনি আমার নাম্বার পেলেন কোথায়?কি মতলব আপনার?
এখন এসব প্রশ্নের জবাব দেওয়ার সময় আমার নেই! আমি যা বলি তুমি শুধু তাই করে যাও...
-দেখেন আমি কারও কোন কাজ করে দিতে পারব নাহ! রাখি।
আগেই রেখ না দয়া করে আমার কথাগুলো শুনো আমার কাজটা করে দেও প্লিজ..
কথাটা শুনে আনিশা এবার ভাবনায় পড়ে গেলো এই সেই নিরব ভাইয়া? যে সবসময় গম্ভির হয়ে থাকে. যার সাথে কথা বলার জন্য কলেজের মেয়েরা পাগল,,,সেই ছেলে আমাকে এভাবে আকুতি করছে..
আচ্ছা কি বলবেন বলেন.
-রিয়া কোথায় যায় কি করে,কার সাথে মিশে কে ওকে ডিস্টার্ব করে সব খবর আমাকে দিবে কেমন?
কিন্তু কেন ভাইয়া?(আনিশা)
আপনি ওর খোজ নিয়ে কি করবেন?কি লাভ আপনার?আপনি নাহ ওকে রিজেক্ট করেছেন এমনকি আপনাদের ফ্রেন্ডশিপ টাও আর নেই তাহলে এসব কেন? আপনার মতো আপনার বন্ধুটাও তোহ আমাকে ধোকা দিয়ে চলে গেছে..আপনাদের প্ল্যানটা কী?আপনারা সব এক....
আরেহ আমার কথাটা শুনো সবকিছু ক্লিয়ার হবে,, তুমি শুধু আমার কাজটা করো.. আর আরাফ তোমাকে সত্যিই ভালোবাসে ওকে ভুল বুঝবে নাহ প্লিজ।কথাটা বলেই কল কেটে দিলো নিরব......
কল কেটে দেওয়ার পর নানা ভাবনায় ডুবে গেল আনিশা.... নিরব ভাইয়া কেন তাকে এই কাজ করতে বললো?ভাইয়ার উদ্দেশ্যটা কি? এসব ভাবনার মাঝেই আবারও ফোন দিল নিরব.. স্ক্রিনে তাকিয়েই আনিশা ভাবে এখন আবার কেন কল করলো? ভাবনার মধ্যেই কল রিসিভ করলো।
-হেলো ভাইয়া বলেন,
-- আমি যে তোমাকে এসব বললাম এগুলো যেন রিয়ার কানে না যাই
-আজব তোহ আমাকে বোকা পেয়েছে নাকি? পাগল টাগল আছে নাকি এই নিরব ভাইয়া?মনে মনে কথাগুলো বলে আনিশা...
-আচ্ছা ভাইয়া..
আর হে আমি জানি তুমি রিয়ার কান অবধি এইটা দিবে নাহ তবুও সাবধান করলাম কথাটা বলেই কল কেটে দিল আবার।
হালকা কাশি দিয়ে রিয়া আনিশার পাশে দাড়ালো, অনেকটা চমকে উঠলো আনিশা...
কিরে তুই এই সময় এইখানে?
কেন আসা যাবে নাহ নাকি?না হলে বল আমি এখনি চলে যাচ্ছি (রিয়া)
আরেহ যাবে নাহ কেন অবশ্যই যাবে(আনিশা)
তা কখন আসলি? ডাক দিসনি কেন?
-এই তোহ মাত্রই আসলাম,, তা কার সাথে কথা বলছিলি তুই? আচ্ছা ভাইয়া বলেই রেখে দিলি কে সেই ভাইয়া??
এই কথা শুনে যেন একটু সস্তির নিশ্বাস ফেলে আনিশা..
যাক কিছু শুনেনি তাহলে(মনে মনে)
আরেহ আর বলিস নাহ আমার এক চাচাতো ভাই ওর জিএফ নিয়ে একটা কথা বলছিল যেন আমি সেই আপুকে কথাটা না বলি!
অহ আচ্ছা বুঝলাম..
আসলে তোকে ফোন দিয়েছিলাম বাট ওয়েটিং এ ছিলো তোর ফোন তাই খেয়ে দিয়ে চলে আসলাম একা একা ভালোও লাগছিলো নাহ তাই আরকি(রিয়া)
অহ এসেছিস ভালোই করেছিস আমারও সময় কাটছিলো নাহ চল একসাথে পড়ি আজ অনেক মজা হবে(আনিশা)
আম্মু ২কাপ কফি দিয়ে যেও তোহ,,,
অনেকক্ষন পড়ার পর আনিশার থেকে বিদায় নেই রিয়া...
🍁🍁🍁
আজ রিয়া আর আনিশার রেজাল্ট বের হবে ২টা বছর কষ্ট করে পড়াশোনা করে এইচএসসি দেই তারা আজ সেই পরিক্ষার রেজাল্ট বের হবে..
কলেজ ক্যাম্পাসে বসে আছে রিয়া আর আনিশা সাথে রিদি,জিসান,আহনাফ ও আছে
আল্লাহ জানে কেমন রেজাল্ট করছি রেজাল্ট ভালো না হলে আমি শেষ বোন কথাটা বলেই কপালে হাত দিল রিদি
জিসান- হে কি যে রেজাল্ট করি আল্লাহ জানে রিয়া আর আনিশা ভালোই করবি তোরা যা পড়িস খুব পড়িস তোরা
আনিশাঃ উফফ থামবি তোরা? চিন্তাই জীবন যাচ্ছে আর আসছে আর ও পরে আছে পড়া নিয়ে
রিয়াঃ দোয়া কর যেন সবাই ভালো রেজাল্ট করি..
আহনাফ ঃএতক্ষনে রিয়া একটা ঠিক কথা বলেছে...
এই শীতেও ঘামছে ওরা
কিছুক্ষন পরেই রেজাল্ট বের হই..
জিসানকে পাঠানো হই রেজাল্ট জানার জন্য কারণ ওদের সাহস হচ্ছে নাহ যাওয়ার...
কিছুক্ষন পর,
এইই শোন তোরা কথাটি বলছে আর দৌড়াতে দৌড়াতে আসছে জিসান..
অবশেষে তাদের কাছে এসে রেজাল্ট বলার প্রস্তুতি নিচ্ছে জিসান
এই এত ঢং না করে রেজাল্ট বল জলদি(রিয়া)
শুন তাহলে আমরা সবাই পাশ করেছি রিয়া আর আনিশা এই ঢাকার মধ্যে ফাস্ট হয়েছে কথাটা শুনেই সবাই শান্তির নিশ্বাস ফেলে...
এখন আনিশা আর রিয়া আমাদের ট্রিট দিবে ওকে?
হে হে দিতেই হবে অবশ্যই..
আচ্ছা দিব যা( আনিশা)
🍁🍁🍁🍁
সবাই বাসাই চলে গেলো.. রিয়া আর আনিশাও চলে এসেছে..
রিয়া ওর বাবা মাকে রেজাল্ট শুনিয়েই রুমে চলে গেছে আর বলেছে তাকে যেন কেও এখন বিরক্ত না করে একা থাকতে চাই রিয়া...রিয়ার মা বুঝতে পারে মেয়ের কষ্টটা কারণ এক বছর আগে এই দিনেই নিরব বিদেশে পাড়ি জমায় আজ এক বছর তার সাথে দেখা হই নাহ.. সাধারণত উচ্চ লেখাপড়ার জন্যই বিদেশে গেছে নিরব..
🍁🍁🍁🍁
ফ্রেশ হয়ে দরজা লাগিয়ে বিছানায় বসে আছে আনিশা..
হঠাৎ তার মনে পড়লো নিরব ভাইয়াকে ফোন দেওয়ার কথা ছিলো রেজাল্ট জানার পর..
ইশ কি ভুলটাই নাহ করে ফেলেছে..এসব ভাবতে ভাবতেই ফোন বেজে ওঠে আনিশার,,,
নিরব ভাইয়া কল দিয়েছে..কলটা রিসিভ করলো আনিশা
হেলো ভাইয়া,
কেমন আছেন?
- আলহামদুলিল্লাহ ভালো তুমি কেমন আছো?
জ্বি ভাইয়া ভালো আছি..
আসলে ভাইয়া আমি ভুলে গেছিলাম রেজাল্ট জানানোর কথা..
আমি রেজাল্ট জানার জন্যই কল দিয়েছি আমি ভাবলাম হয়তো তুমি আর রিয়া রেজাল্ট খারাপ করেছ তাই কল দিতে লজ্জা পাচ্ছো..(নিরব)
এহহহহ কি কথা আমরা রেজাল্ট খারাপ করব ফেল করব কি ভাবনা মনে হই এই নিজে একাই ব্রিলিয়ান্ট,,কথা গুলো মনে মনে বললো আনিশা
আরেহ ভাইয়া কি যে বলেন নাহ আমরা ফেইল করব?আমি আর রিয়া তোহ...
থাক বলা লাগবে নাহ আমি আগেই জেনেছি তোমাদের রেজাল্ট অনেক খুশি হয়েছি আমি..আমি জানতাম রিয়া পারবে..
কংগ্রাচুলেশনস..
আচ্ছা রাখি পরে কথা হবে...
আচ্ছা ভাইয়া..
কল টা কেটে দিয়ে একশোটা গালি দিল নিরবকে
এহহহহ আমার বান্ধবীরে ছেকা দিয়া এখন আসছে আমাদের খোজ নিতে ঢং এসব ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ আনিশার মনে এক গভীর ভাবনার উদয় হলো, আচ্ছা নিরব ভাইয়া যদি রিয়াকে ভালোইবাসে তাহলে রিজেক্ট কেন করলো? আর এখন এত দরদ কেন দেখাচ্ছে?? রহস্যটা কি?আর আরাফ যদি আমাকে ভালোবেসেই থাকে তাহলে ছেড়ে কেন গেলো? আবার নাকি ফিরেও আসবে আমার কাছে, কিন্তু কবে?
এসব ভাবতে ভাবতেই ঘুমিয়ে যায় আনিশা...
রাত ১১টা বাজে রিয়ার ফোনে ঘুম ভাংগে আনিশার সেই বিকাল ৫ঃ৩০ এ ঘুমিয়েছিল সে..
কিরে আনিশা এখনো ঘুমাচ্ছিস? এত ঘুমালে তহ মোটা হয়ে যাবি,তখন তোকে কে বিয়ে করবে? সবাই মুটকি বলবে তোকে..
কথাগুলো বলে বেশ শব্দ করেই হেসে ফেলে রিয়া..
অন্যদিকে আনিশা রেগেমেগে অস্থির..
তোর মতো চিকনাকে কে বিয়ে করবে রে??ফু দিলেই তোহ উড়ে যাবি..ঘুম থেকে উঠলাম নাহলে তর খবর ছিলো.. (আনিশা)
হে হে জানি কেমন খবর করবি বাদ দে চল কালকে একটু ঘুরে আসি নদীর পাড় থেকে..
এভাবেই আরও ৪টা বছর কেটে গেলো...
কি হবে আগামী ৫বছর পর? সব ভালোবাসা কি এক হবে?
আর কতদিন এভাবে বসে থাকবি? এবার বিয়েটা করে ফেল মা,, আমরাও আর বেশিদিন বাচব নাহ তোরও বয়স হচ্ছে আর ভালো পাত্র পাব নাহ আমরা,,আমরা তোর বাবা-মা তোর ভালো চাই। খাওয়ার টেবিলে বসে কথাগুলো রিয়াকে বলছিলেন মুজিবুর রহমান (রিয়ার বাবা)
আমাকে যদি তোমাদের বোঝা মনে হয় তাহলে বলতে পারো আমি নিজের পথ বেছে নিতে জানি,,,(রিয়া)
আরেহ এভাবে কেন বলছিস?আমরা তোহ তোর ভালোই চাই তাই নাহ?(রিয়ার মা)
আমি কি না করেছি?সন্তানদের ভালো -মন্দ তোহ মা-বাবাই চাইবে,,কিন্তু আমাকে বিয়ের কথা বলবে নাহ আমার যেদিন ইচ্ছে হবে আমি নিজেই বলব তোমাদের(রিয়া)
সেই ইচ্ছে তোর কবে হবে? ২১এ পা দিয়েছিস তুই খেয়াল আছে?(রিয়ার বাবা)
কথাগুলো শুনেই না খেয়েই খাবার টেবিল থেকে ওঠে রুমের দিক পা বাড়াতেই...
আরেহ আংকেল আন্টি এত টেনশন করছেন কেন ওর বিয়ে নিয়ে?কথাগুলো বলতে বলতে বাসাই প্রবেশ করে আনিশা..
আনিশাকে দেখেই মুচকি হাসে রিয়া..
আয় ভেতরে আয় মা..কথাগুলো বলে ওঠে দাড়াঁন রিয়ার বাবা..তিনি যে আনিশাকে নিজের মেয়ের থেকে কোন অংশে কম দেখেন নাহ..
হুম.. আর রিয়ার বিয়ে তোহ আমার দেবরের সাথেই দিব..আমি কি দেবর ছাড়া বিয়ে করব নাকি?(আনিশা)
তা তোর শাশুড়ী মানবে তোহ?কথা বলতে বলতে আনিশার পাশে এসে বসলো রিয়া............
মানবে নাহ কেন?এত সুন্দর মেয়েকে বউ হিসেবে পাওয়া তার সৌভাগ্য,,, কথাটা শুনেই হেসে ফেলে রিয়া..
আচ্ছা অনেক হয়েছে এখন চল রুমে যায় আমি আর তুই আড্ডা দেই..(রিয়া)
রুমে ঢুকেই দরজা বন্ধ করে দেই রিয়া...
তা রিয়া তোর বিয়ে বসতে আপত্তি কিসের?যাকে ভালোবাসিস সে তো তোকে পাত্তাই দেই নাহ..
৫বছর হলো বিদেশে গেছে আসবে কি আসবে নাহ তার ঠিক নেই আর আসলেও যে তোকে বিয়ে করবে এর কি নিশ্চিয়তা আছে?
আরেহ এমন কিছু নাহ তোর দেবরের সাথে বিয়ে বসবো দেখেই তোহ বিয়ে করছি নাহ এখনো.. (রিয়া)
দেখ রিয়া মজা নাহ সিরিয়াসলি নে বিষয়টা
আচ্ছা নিলাম..
এখনো ভালোবাসিস ভাইয়াকে?(আনিশা)
কিছুক্ষণ চুপ থেকে জবাব দিলো রিয়া..
আসলে কি জানিস তোহ?আমি নিরবকে যতটা ভালোবেসেছি তার থেকে ওর মায়ায় পড়েছি বেশি..
একটা কথা কি জানিস?(রিয়া)
না বললে জানব কেমনে??(আনিশা)
°ভালোবাসার চেয়ে কঠিন জিনিস 'মায়া'।
ভালোবাসা চলে গেলে মানুষ ৩০ বছরের সংসার ফেলেও চলে যেতে পারে। আবার মানুষ'ই ৩ মাসের মায়ায় পড়ে সারাজীবন কাউকে আঁকড়ে ধরে পড়ে থাকে। ভালোবাসার শেষ আছে কিন্তু মায়া অবিনশ্বর, চিরন্তন ও ধ্রুব...
কথাটা বলেই এক ফোটা অশ্রু বের হলো চোখ থেকেই..
হুম বুজলাম তাহলে সারাজীবন চিরকুমারি থাক..
কে বলতে পারে?সে যদি আমার কাছে আবারও ফিরে আসে?(রিয়া)
আসলে এই ৫ বছর তর সাথে যোগাযোগ করত রিয়া এত বোকা কেন তুই?(আনিশা)
তুই এখনো বিয়ে করিসনি কেন?প্রশ্নটা আনিশাকে ছুড়ে মারে রিয়া..
মুহুর্তেই আনিশা চুপ হয়ে যাই...
আনিশাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই রিয়া বলা শুরু করে..
আসলে তোর যে আমার মতোই অবস্থা..
হয়েছে হয়ছে আর বলতে হবে নাহ কথাটা ছল ছল চোখে বলে আনিশা..
রিয়া কিছু বলতে যাবে তখনি আনিশার মোবাইল বেজে ওঠে..
স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখে নিরব ভাইয়া কল করেছে..
আচ্ছা আমি আসছি একটা কল এসেছে আমার.. বাই...
🍁🍁🍁🍁🍁
বাসা থেকে বেড়িয়ে আসে আনিশা কল রিসিভ করে..
-জ্বি ভাইয়া বলেন....
আনিশা আমি দেশের মাটিতে পা রেখেছি..আমি আর
ওহ ভাইয়া আপনি এসেছেন? তাহলে তোহ খুব শীগ্রই একটা বিয়ে খেতে চলেছি আমি..
অন্যদিকে...
হেলো রিয়া..
হে বলেন ভাইয়া..
আমি আরাফ বলছি..দেশের মাটিতে পা রেখেছি আমি..
বাহ ভাইয়া অনেক খুশি হলাম..অনেকদিন পর আপনার সাথে আবার দেখা হবে আমাদের..
আচ্ছা ভাইয়া রাখছি কেমন? আমার ব্যাটারি লো হয়ে গেছে.. (রিয়া)
আচ্ছা রাখছি(আরাফ)
................................
...........
আসলে যেদিন থেকে নিরব আনিশার সাথে যোগাযোগ করে তার ঠিক তিনমাস পর আরাফও রিয়ার নাম্বার জোগাড় করে তার সাথে যোগাযোগ করে..
🍁🍁🍁🍁🍁
আজ বেশ সকাল সকাল উঠেছে রিয়া সাথে আনিশাকেও ফোন দিয়ে তুলেছে..ফ্রেশ হয়ে বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে রিয়া.. আজ সকালটা কেমন যেন অন্যরকম লাগছে সকালটা আজ ভিন্ন ভেবে সেজেছে..অপরুপ লাগছে কথাটা মনে মনে বলছে রিয়া..
আজ অনেকদিন পর আবার তারা ৫বন্ধু একসাথে হবে সারাদিন তাদের সাথেই কাটাবে..অন্যদিকে নিরব আর আরাফও আজ পুরা শহর ঘুরে দেখবে..
🍁🍁🍁
সাধারণত এই ৫বছর ঘটে যাওয়া সকলের জীবনের কাহিনি শুনার জন্যই এই আয়োজন ওদের.. শুধু রিয়া আর আনিশার জীবন কাহিনি সবার জানা..
বেলা ১১টা আনিশা আর রিয়া বের হলো বাসা থেকে.. ২০মিনিট পর তাদের চিরচেনা সেই কলেজ ক্যাম্পাসে সবাই একত্রিত হলো..
জিসান এর বিয়ে হয়েছে ৪বছরের ছোট একটা মেয়ে হয়েছে মেয়ের নাম রেখেছে কেয়া..
ওমা কি সুন্দর বাচ্চাটা বলেই কোলে নিল রিয়া..
অন্যের বাচ্চা তোহ অনেক আদর করলি রিয়া..এবার নিজেরটার আসার ব্যবস্থা কর আমরাও একটা বিয়ের দাওয়াত খাই?(নাহিদ)
উফফ তোরা থামবি? আমার বিয়ে খাওয়ার কথা না ভেবে নিজে কবে বিয়ে করবি সেই কথা ভাব (রিয়া)
আমার বিয়ে তোহ ঠিকঠাক এর মধ্যেই.. সামনেই দাওয়াত পাবি..
বাহ বাহ..সাব্বাশ(আনিশা)
এই রিদি তর কি অবস্থা? (রিয়া)
আলহামদুলিল্লাহ ৩বছর ভালোবেসে বিয়ে করেছি..
বাহ বাহ সবাই একসাথে হাততালি দিয়ে উঠলো..
দাওয়াত কই আমাদের?(রিয়া)
বিদেশে বিয়ে হয়েছে আমাদের তাই আরকি(রিদি)
হয়েছে হয়েছে..
দেখতে দেখতে সন্ধ্যা হয়ে এলো..সবাই সবাইকে বিদায় জানিয়ে বাসাই ফিরল...
🍁🍁🍁🍁🍁
তোমরা আমাকে না জানিয়ে বিয়ে ঠিক করে ফেলেছ? আমার মত নেওয়ার প্রয়োজন মনে করলে নাহ..কথাগুলো বলছিল আর কান্না করছিলো আনিশা..
আরেহ আগে শুন তো কার সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছে তোর (আনিশার মা)
কার সাথে?(আনিশা)
আরাফের সাথে আরাফ বাবা আমাদের সব বলেছে.. তাই ভাবলাম..
কথাটা শুনে লজ্জা দৌড়ে ঘরে চলে যাই আনিশা...
ঘরে ঢুকে রিয়াকে ফোন দেই আনিশা..
হেলো রিয়া..
হুম বল(রিয়া)
আরাফের সাথে আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে আগামী শুক্রবার আমাদের বিয়ে পারিবারিকভাবেই হবে আমার ফ্রেন্ডরা থাকবে আর কিছু আত্নীয়..
আমি ভাবতেই পারিনি যে আরাফ এমনটা করবে আমি সত্যি অনেক খুশি....(আনিশা)
আরেহ বাহ..কিন্তু আমার জানামতে তহ তর তাহলে দেবর নেই আমার কি হবে? (রিয়া)
আরেহ আরাফের বন্ধুরাও তহ আমার দেবর নাকি?
একটা বন্ধুর সাথে দিয়ে দিব তোকে..
Romantic Bangla Love Story
দেখতে দেখতে বিয়ের দিন চলে এসেছে আনিশার..
আজ আনিশার বিয়ে.. বাসায় আত্নীয়-স্বজন দিয়ে ভরপুর..একটু আগে রিয়াও এসেছে..
আনিশা জেদ ধরেছে তার বিয়ের সাজ রিয়াই সাজিয়ে দিবে..
এই রিয়া কখন আমাকে সাজাবি?(আনিশা)
ওরে বান্ধবীর যেন তড় সইছে নাহ,,,,আগে বরপক্ষ আসুক, ভাইয়ার কাছ থেকে দাবিগুলো মিটাব নাহ? তার আগে তোহ তোকে সাজাবো নাহ(রিয়া)
বাকি বন্ধুরাও চলে এসেছে...
সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়েছে বেলা ২টা বাজে এখন...
বর এসেছে, বর এসেছে বলতে বলতে রিয়াকে ডাকতে আসছে বাচ্চারা..
এই রিয়া আপু,রিয়া আপু বর এসেছে..
আনিশার দিক তাকিয়ে মুচকি হেসে রিয়া বললো চলো চলো দাবিগুলো তাড়াতাড়ি মিটাই..নাহলে আমার বান্ধবির আবার সাজতে দেরি হয়ে যাবে...
গেটের সামনে দাড়িয়ে আছে রিয়া আর আনিশার কাজিনরা....
আরাফের বন্ধুদের মধ্যে একজন বলে উঠলো,,
তা আপনাদের দাবি কত?তাড়াতাড়ি বলেন কতক্ষন দাড়িয়ে থাকব? পেটের মধ্যে ইঁদুর দৌড়াচ্ছে...
আরেহ ভাইয়া কদিন হলো না খেয়ে আছেন বিয়ে খাবেন দেখে?(রিয়া)
এভাবে বেশ কিছুক্ষন চলতে থাকলো...
অবশেষে সেই সময় চলে আসলো..
আনিশার বিয়ে হয়ে গেলো.. বিদায় নিয়ে পাড়ি জমালো শশুড়বাড়ি...
আজ আনিশার বিয়ের ১মাস পেরিয়ে গেছে.. রিয়া এখন সারাদিন রুমে বসে থাকে.. সময় কাটানোর মতো আর কেও নাহ তার...আজ নিরব এর কথা খুব করে মনে পড়ছে রিয়ার....৭টা বছর হয়ে গেছে কথা হই নাহ আর কত সহ্য করবে সে?
🍁🍁🍁
হঠাৎ একদিন রিয়ার বাবা অসুস্থ হয়ে পড়ে ঠিক অসুস্থ নাহ অসুস্থ হওয়ার অভিনয় করছেন তিনি.........
রিয়া মা আমার শেষ অনুরোধটা রাখবি মা?
কি অনুরোধ বাবা?(রিয়া)
বিয়েটা করে ফেল দয়া করে,আর কতদিন এমন থাকবি?
রিয়া না করতে গিয়েও থেমে যায় আসলেই আর কতদিন এভাবে থাকবে সে?নিজের ইচ্ছেকে বলি দিয়ে বাবার ইচ্ছে পুরন করাই ভালো হবে...
কি হলো মা?(রিয়ার বাবা)
রিয়া প্লিজ না করিসনা মা দেখছিস তোহ তোর বাবার অবস্থা (কান্না করতে করতে কথাগুলো বলেন রিয়ার মা)
- বেশ তাহলে তাই হবে,, পাত্র দেখ তোমরা আমি বিয়ে করব।(রিয়া)
সত্যিই মা? সত্যিই বলছিস তুই বিয়ে করবি?(রিয়ার বাবা-মা)
হ্যাঁ বাবা,আমি সত্যিই বলছি।(রিয়া)
আমার কাছে একটা ভালো পাত্র আছে শুনেছি ছেলেটা বিদেশ থেকে ডাক্তারি পড়ে এসেছে এখন নাকি ঢাকা মেডিকেলে ডাক্তারি পদে আছে...
অনেক সুখে থাকবি তুই।(রিয়ার বাবা)
আচ্ছা আমি রুমে গেলাম..(রিয়া)
🍁🍁🍁🍁
ফুপিয়ে কান্না করছে রিয়া,, সে ভাবতেও পারেনি নিরবকে ছাড়া
আরেকজনের হতে হবে..
কেন নিরব কেন??
কেন এমন করলে তুমি? আমার ভালোবাসার মুল্য কেন দিলে নাহ?আমাকে কেন বুঝলে নাহ?সত্যিই কি আমি যোগ্য নাহ?এসব বলছিল আর কান্না করছিলো রিয়া...
আজ রিয়াকে দেখতে আসবে সাথে পাকা কথাটাও সেরে ফেলবে..
তা ছেলে আসেনি?(রিয়ার বাবা)
আসলে ছেলের একটা কাজ ছিলো তাই আসতে পারেনি আর ছেলেকে তো আপনারা দেখেছেন( ছেলের মা)
🍁🍁🍁
বিয়ের কথা পাকা হলো রিয়ার আগামী সপ্তাহে তাদের বিয়ে..
আনিশাকে ফোন দিয়ে ইতিমধ্যে সব বলেছে রিয়া।আনিশা মুচকি হেসে বললো তা ছেলেকে দেখিসনি?
-না আমার দেখার কোন ইচ্ছে নাই...(রিয়া)
বাসর রাতে তর বরকে দেখে যেন আবার অজ্ঞান না হয়ে পড়িস..(আনিশা)
মানে???(রিয়া)
আরেহ মজা করলাম(আনিশা)
অহ(রিয়া)
বেশ কিছুক্ষণ কথা হওয়ার পর কল কেটে দিল রিয়া...
আজ রিয়ার বিয়ে.. কনের সাজে সাজিয়ে দিল রিয়াকে..
বাহ এত সুন্দর করে সাজালো কে?(রিয়ার ননদ)
রাত ১০টাই রিয়ার বিয়ে হয়ে গেলো.. বাড়ি খালি করে চলে গেল বাড়ির একমাত্র মেয়ে রিয়া...
🍁🍁🍁
বাসর রাতে বসে আছে রিয়া,,মনে এক অজানা ভয় রিয়াকে তাড়া করছে..
কে সেই ছেলে?যাকে রিয়া আজ স্বামী হিসেবে কবুল করেছে?বিয়ে পড়ানোর সময় নামটাও শুনা হইনি...
কি অদ্ভুত তাই নাহ?যাকে বিয়ে করলাম তার নামটা অবধি জানি নাহ..কথাগুলো আনমনে বলছিল রিয়া..
হঠাৎ ঘরে কারও প্রবেশ টের পেলো রিয়া..বুঝতে বাকি রইলো নাহ তার স্বামী ঘরে বসে আছে..
এখনো কি আমার দিকে ফিরে তাকাবেন নাহ?এতটাই অভিমান জমে আছে?(নিরব)
অবাক হয় রিয়া,,,এইটা তোহ নিরবের কন্ঠ..
একি আপনি এখানে কেন? দেখেন আমার হাজবেন্ড দেখলে কিন্ত আমাকে ভুল বুঝবে দয়া করে তার সাথে আমার অশান্তি করাবেন নাহ..প্লিজ!(রিয়া)
আরেহ আমার ঘরে আমি আসব না তো কি অন্যকেও আসবে? (নিরব)
মানে? আপনি আমাকে বিয়ে করেছেন তাহলে সেইদিন কেন রিজেক্ট করেছেন আমাকে?কেন এত অভিনয়?? (রিয়া)
আচ্ছা তাহলে শুনো
তুমি যখন আমাকে প্রস্তাব দিলে তার আগে থেকেই আমি তোমাকে ভালোবাসি কিন্তু তখন তোমাকে গ্রহণ করলে এইটা জানাজানি হয়ে যেত.......আর আমাদের বাবা-মাও আমাদের মেনে নিত নাহ কারণ তখন তোমার বাবার সাথে আমার বাবার সম্পর্ক বেশি একটা ভালো ছিলো নাহ .......তারপর আমাদের বিচ্ছেদ ছাড়া আর কিছু হতো নাহ.. তোমার বাবা হয়তো তোমাকে বিয়েও দিয়ে দিত তখন আমাদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হত সাথে তাহলে তুমিই এখন বলো আমি কি তখন ঠিক কাজ করিনি?(নিরব)
আর কিছু বলার ভাষা পেলো নাহ রিয়া কারণ তখন নিরব ঠিক কাজটাই করেছিলো...
.....................................
প্রতিদিন কলেজ যাওয়ার পথে আমি তোমার পিছু নিতাম যাতে তুমি ঠিকভাবে যেতে পার...
আনিশার কাছ থেকে এই ৬বছর আমি তোমার খোজ নিয়েছি..
💝💝💝💝
আমিও তোমাকে ভিষণ ভালোবাসি প্রেয়সী...
সব শুনে কান্নায় ভেঙে পড়ে রিয়া... তার এতদিনের অপেক্ষা সার্থক হয়েছে.. তার ভালোবাসা পেরেছে...
যাক বাবা...আজ আবার কোন দুঃখ কান্না করছো? (নিরব)
দুঃখে না নিরব আমি আজ সুখের কান্না করছি...পৃথিবীর সকল সুখ যেন আজ আমাকে ঘিরে ধরেছে(রিয়া)
-উফফ থামো কান্না করে তোহ বাসর রাতটাই মাটি করে ফেলছ.. আজকের মতো রাত কি আরও পাবে?(নিরব)
নিরবের কথা শুনে লজ্জায় রিয়ার গাল লাল হয়ে গেছে...
কি করবে এখন?(রিয়া)
চলো আজ আমরা গল্প করি ভালোবাসার গল্প করব আমরা.. এই জোছনা রাতকে আমরা আরও সুন্দর করে তুলি বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে চলো না আমরা বারান্দায় দাঁড়িয়ে বৃষ্টি দেখি দুজন...রাতটা এভাবেই কাটলো..
সকাল শুরু হলো ভালোবাসা দিয়ে....
নতুন সাজে সাজলো প্রকৃতি...
৯বছর পড়,,,,ওইতো নীলা স্কুল থেকে আসছে তার বাবা নিরবের হাত ধরে..রিয়া আর নিরবের ভালোবাসার চিহ্ন এই নীলা.. হে নিরব আর রিয়ার মেয়ে নীলা....
আনিশার একটি ছেলে হয়েছে নীলা হওয়ার ২বছর আগে...
ভালোবাসতে হলে অপেক্ষা আর বিশ্বাস এই দুইটাই প্রয়োজন.........
এরকম ভালোবাসাগুলো বেঁচে থাকুক চিরজীবন..,💝
গল্পটি আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে?সবার গঠনমূলক মন্তব্য আশা করছি😊কারন আপনাদের একটি মন্তব্য আমাকে নতুন গল্প লিখতে অনুপ্রেরণা করবে...
সবার মতামত আশা করছি💝
হ্যাপি ইন্ডিং💝